Monday, October 30, 2017

বহুল প্রতিক্ষিত চলতি বছরের মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ডুব’ সিনেমা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় ও বিভিন্ন অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আমরাও কয়েকজন বন্ধু একত্রিত হলে চা ঘরে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে আলোচনা করতাম। কেউ বলে সিনেমাটি এমন হবে, আবার কেউ বলে না ওরকম হবে। এ নিয়ে বন্ধুদের মধ্যে সুক্ষ্ম মতের অমিল হয় এবং তখনই কথা হয় দেখা হবে মাঠে (সিনেমা হলে)। 

মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী নির্মিত চলচ্চিত্র ডুব নিয়ে ফারুকী দি ইন্ডিায়ান টাইমসকে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন ’ডুব’ হুমায়ুন আহমেদ এর বায়োপিক এবং ছবিটির এক অভিনেত্রী পর্ণ মিত্র তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন তিনি মেহের আফরোজ শাওন এর চরিত্রে এই ছবিতে অভিনয় করছেন। এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের সূত্রপাত হয়। সে সূত্রে হুমায়ুন পত্নী মেহের আফরোজ শাওন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে ছবিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। যাতে সেন্সর বোর্ড‘ ছবিটি ভালো করে পর্যবেক্ষন করে মুক্তি দেন। পরবর্তীতে সেন্সর বোর্ড ছবিটি বেশ কিছুদিন আটকে রাখে। এদিকে ফারুকীর অর্থ  খরচসহ নানা যুক্তিনির্ভর তথ্য উপাত্ত প্রদান করে ছবিটি রিলিজের ব্যাপারে তোড়জোড় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ফারূকী ছবিটি হুমায়ুন আহমেদ বায়োপিক নয় বলে হাজারো যুক্ত প্রদার্শন করেছেন। অবশেষে সে্ন্সর বোর্ডে এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক সম্পুর্ন ছবিটি থেকে 5মিনিট কর্তন পূর্বক অক্টোবর, 27, 2017 রিলিজ হবে ঘোষনা হয়। মুক্তি পেলো বটে। দেখেও নিলাম, মনে হলো ডুব দিলাম আর বের হয়ে বললাম ‘আহারে জীবন’  মনে হল আমরাই ভাল আছি। 

আমাদের মধ্যে সেই উত্তেজনা ‘ডুব‘ আসছে ।  মনডায় চায় এখনই ডুব দেখি।  কিন্তু আকর্ষন আরও বেড়ে যায়। সেই প্রতিক্ষিত ‘ডুব’ 27 অক্টোবর, 2017ইং দেশ বিদেশে 81টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। যার মধ্যে মতিঝিলে অবস্থিত মধুমিতা হলও একটি। 

আমরা কয়েকজন বন্ধু দল পাকালাম এবং তোরজোড় করে মধুমিতা সিনেমা হলের সামনে হাজির হলাম। রিক্সা থেকে নেমেই দেখি ডুব টি-শার্ট  পরিহিত কয়েকজন যুবক....... জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি অবস্থা? তারা বাদাম খেতে খেতে বলল দেখেন ভাই, এই আর কি! তাদের পাশেই ছিল হ্যান্ড মাউথ ও ক্যামেরা হাতে দুই যুবক। হয়ত ইউটিউবার হবে আন্দাজ করলাম। তারা বলল দেখেন ভাই টিকেট কত চায়, বেশি চাইলে ধুম-ধাম মার শুরু করবেন। তারপর হেটে খানিকটা এগোতেই চোখে পড়ে লোকজনের জটলা। তার মধ্য থেকেই শব্দ আসছে---এই রিয়্যাল, রিয়্যাল, রিয়্যাল। বুঝতে বাকি রইল না সিনেমার টিকেট বিক্রি হচ্ছে। দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই টিকেট কত? লোকটি যেন বলার জন্যই অপেক্ষা করছে। ছট করে বলে উঠল 250 টাকা। বললাম ডিসি নাই? বলল না। অন্য বন্ধুদের জানালাম, তারা বলল এরা টিকেট ব্ল্যাকার। সিনেমা হলের মেইন ফটকে তালা ঝুলছে। ভিতরে শো চলছে।কিন্তু বুঝতে পারছি না কার কাছ থেকে টিকেট নিব। এভাবেই মেইন ফটকে দাড়িয়ে রইলাম কুড়ি মিনিট। তারপর মেইন ফটক খুলল। সকলে মিলে ভিড়ের মধ্যে দ্রুত লাইনে দাড়াবার চেষ্টা। লাইনে দাড়ালাম এবং এই বুঝি টিকেট পাওয়া যাবে ভেবে সস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। অবশেষে টিকেটে পেলাম 6:15 মিনিট শো’এর এবং অারও এক ফটক ভিতরে ঢুকলাম। দেখতে পেলাম দেয়ালে টাঙানো বিভিন্ন পোস্টার, যার মধ্যে ডুবের মাটি থেকে দাড় করিয়ে রাখা একটি বড় পোস্টার দেখলাম। ব্যাকগ্রাউন্ড এ গান বাজছে “কপি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই।” 

ইতিমধ্যে 3:30 এর শো শেষ হয় এবং সারিবেধে লোকজন বের হতে থাকে। তদের মধ্যে কাউকে কাউকে কৌতুহলবশত জিগ্যেস করলাম কেমন দেখলেন, কেউ তেমন কিছু বলতে পারেনি, একজন গাছাড়াভাবে বলল হুম ভালোই। একটি ফটক পার হলেই মূল দৃশ্যগৃহে ঢুকব। সে ফটকও পাড় হতে চাইলাম। ফটকে দাড়িয়ে থাকা গেরিলা  গোফ ওয়ালা লোক বলল 15 মিনিট পড়ে। বেশ ভাল আগ্রহ ভড়ে ফুরফুরে মেজাজ খারাপ। এতো দেড়ি করে কেন! এরই মধ্যে বাহিয়ে গিয়েসবাই মিলে পিয়াজ মরিচ কড়া করে দিয়ে চানাচুর খেয়ে আসতে না আসতে  ‍দৃশ্যগৃহ প্রায় পূর্ণ হয়ে গেল। আমাদের টিকেটের গায়ে সিট নাম্বার দেওয়ার ছিল বলে নির্দিষ্ট আসনেই বসলাম। ভিতরে কেমন জানি একটা মিষ্টি মিষ্টি অন্ধকার। পর্দার আড়ালে রিলাক্স মুডে গান বাজছে। চতুর্দিক থেকে শব্দ আসছে এখনো কেন ছাড়া হচ্ছে না, তাড়াতাড়ি ছাড়েন।  উৎসুক দর্কদের যা করার তাই আর কি। 

এরই মধ্যে টিপ করে সব আলো নিভে গেল, চমকে যেতে না যেতেই বড় পর্দা দুপাশে সরে যেতে লাগল এবং অন্য একটা ছবির এ্্যাকশনএ্যাড হই ... হেই ....ঐ .....আ। এরই মধ্যে ডুব ছবির দৃশ্য হাজির।

SHARE THIS

Author:

Souls Sound is a leading technology media property, dedicated to technology trends, important software, biggest collection of song lyrics, album information, biggest book library, technology tutorial, literature news and reviewing latest topics.

0 comments: