পাবলো পিকাসো ও গিওম আপোলিনেয়ার
![]() |
পাবলো পিকাসো ও গিওম আপোলিনেয়ার |
তাঁরা ছিলেন পরস্পরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ফরাসি শিল্পী পাবলো পিকাসো ও কবি গিওম আপোলিনেয়ার। তাঁদের প্রথম দেখা ১৯০৫ সালে। স্বল্পায়ু গিওমের মৃত্যু হয় ১৯১৮ সালে, কিন্তু পিকাসো পেয়েছেন দীর্ঘ জীবন। পিকাসো গিওমের বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকে দিয়েছেন, তাঁর প্রতিকৃতি করেছেন। এ
কই সঙ্গে পিকাসো ও গিওম একটি চিঠি পড়ছেন—এমন একটি ছবি এঁকেছেন তিনি ১৯২১ সালে। সারা জীবন বারবার তিনি মনে করেছেন বন্ধু গিওমের কথা। ১৯১০-এর দশকে গিওম ছিলেন প্যারিসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্র ও কাব্যসমালোচক। পিকাসোকে আরও বড় করে তুলে ধরতে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়েছেন তিনি। একবারই শুধু ঝামেলায় ফেলে দিয়েছিলেন পিকাসোকে।
২১ আগস্ট ১৯১১। ল্যুভ মিউজিয়াম থেকে চুরি হয়ে যায় লিওনার্দো দা ভিঞ্চির বিখ্যাত চিত্রকর্ম 'মোনালিসা'। পরদিন শিল্পী লুই বেরুদ মিউজিয়ামে গিয়ে দেখলেন, পাঁচ বছর ধরে 'মোনালিসা' যেখানে শোভা পাচ্ছিল, সেখানে দেয়ালে কেবল চারটি পেরেক, শিল্পজগতের সবচেয়ে আলোচিত এই নারী নেই। প্রথমে মনে করা হলো, ল্যুভের কোনো বিজ্ঞাপনী প্রয়োজনে ছবি তুলতে হয়তো 'মোনালিসা'কে অন্য কোথাও সরানো হয়েছে; কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমন কিছু ঘটেনি বলে জানালেন। অর্থাৎ 'মোনালিসা' চুরি হয়ে গেছে। গোটা সপ্তাহের জন্য বন্ধ হয়ে গেল ল্যুভ মিউজিয়াম।
আপোলিনেয়ার একবার ল্যুভ পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। সুতরাং পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করল, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুরল কারাগারে। গিউম পুলিশি প্রশ্নের মুখোমুখি শিল্পী পাবলো পিকাসোর নাম বলে দিলেন। গ্রেপ্তার হলেন তিনিও। অবশ্য চুরির সঙ্গে তাঁদের কারোরই কোনো যোগসূত্র না পাওয়ায় একসময় ছেড়ে দেওয়া হয় দুজনকেই। উদ্ধারকৃত 'মোনালিসা' ৪ জানুয়ারি ১৯১৪ ল্যুভে ফিরে আসে।
গিওমের মৃত্যুর ৩০ বছর পূর্তিতে পিকাসো আবার তাঁকে স্মৃতি থেকে এঁকে ছিলেন। গিওমকে এঁকেছেন অঁরি রুশো, মাতিসে, মার্ক শাগাল, মিখাইল লারিনোভ, জুয়ান গ্রিস, জ্যা ম্যাটজিঞ্জার, মার্সেল জর্জিও চিরিকো এবং অভিন্নহৃদয় বন্ধু পিকাসো তো বটেই।
0 comments: